নিরাপদ সড়ক আন্দোলন অভিনয়শিল্পীরাও রাজপথে
ডিটেকটিভ বিনোদন ডেস্ক
সড়ক দুর্ঘটনায় দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় চতুর্থ দিনের মতো আন্দোলন চলছে। গতকাল বুধবার সকালে রাস্তায় আন্দোলনকারীদের সমর্থন জানিয়ে রাস্তায় নেমেছিলেন অভিনয়শিল্পী মনিরা মিঠু ও আবদুল্লাহ রানা। তাঁদের হাতে পোস্টার ছিল। সেখানে লেখা ছিল, ‘বিচার শুধু মুখে নয়, বাস্তবে দেখতে চাই।’
এ বিষয়ে মনিরা মিঠু বলেন, ‘সকাল ১০টায় আমরা আজ (বুধবার) হাউস বিল্ডিং থেকে জসীমউদদীন রোড পর্যন্ত আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে হেঁটেছি। আমরা ৪৫ মিনিট সেখানে ছিলাম। তবে সারা দিন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে থাকলে তৃপ্তি পেতাম। সেখানে যাওয়ার পর বুঝলাম, একা একা অনেক কষ্ট করছে শিক্ষার্থীরা। আমাদের পেয়ে মনে হয়েছে, তারা বাবা-মা পেয়েছে। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে নিয়ে সারা বাংলাদেশ হাঁটলে ভালো লাগত।’
মনিরা মিঠু আরো বলেন, ‘উত্তরায় এখন শুটিং করছি। শুটিংয়ের বিরতিতে ৫টার দিকে আবারও শিক্ষার্থীদের পাশে গিয়ে দাঁড়াব। দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে। দোষীদের শাস্তি তিন বছরের জেল যথেষ্ট নয়। আমি চাইব তাদের মৃত্যুদ-।’ উত্তরায় পুলিশরা সহযোগিতামূলক আচরণ করছে বলেও জানান মনিরা মিঠু।
এদিকে, আন্দোলনে যাওয়ার আগে মনিরা মিঠু সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আমি যাচ্ছি আমাদের রক্তাক্ত বাচ্চাদের পাশে রাজপথে।’
অভিনেতা আবদুল্লাহ রানা লিখেছেন, ‘আছি আমাদের ছেলেমেয়েদের পাশে। হাউস বিল্ডিং থেকে আজমপুর। আপনারা?’
অন্যদিকে অভিনেতা রওনক হাসান ফেসবুকে লিখেছেন, ‘ছোট ছোট ছেলেমেয়ে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করবে। পুলিশের মার খাবে আর তাদের বাবা-মা বাসায় বসে ইয়া নফসি করবে, আমরা ফেসবুকে সহমত, মানি না, মানা যায় না ইত্যাদি ইত্যাদি বলে প্রতিবাদে ফেসবুক ফাটিয়ে ফেলব, তাতেই সমাধান ভাবছেন! যে পুলিশ বাচ্চাদের রক্তাক্ত করছে, কাল দেখুন আপনারই সন্তান অন্য পুলিশের হাতে রক্তাক্ত হবে। আর প্রতিবাদী বিপ্লবীরা ফেসবুকে আর ঘরে বসে না থেকে রাস্তায় বেরিয়ে আসুন হে।’
গত রোববার দুপুরে রাজধানীর কুর্মিটোলায় বিমানবন্দর সড়কে বাসের চাপায় দুই কলেজ শিক্ষার্থী নিহত হয়। জাবালে নূর পরিবহনের দুটি বাস প্রতিযোগিতা করে মিরপুর থেকে ফ্লাইওভারের ওপর দিয়ে আসছিল। এ সময় ফ্লাইওভারের শেষ দিকে, রাস্তার পাশেই দাঁড়িয়ে ছিল একদল শিক্ষার্থী। এর মধ্যে একটি বাস ফ্লাইওভার থেকে নেমেই দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষার্থীদের চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। এ ছাড়া আহত হয় বেশ কয়েকজন। নিহতরা হলো শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী দিয়া খানম মিম ও দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আবদুল করিম। ওই ঘটনার পর থেকেই বিমানবন্দর সড়কসহ বিভিন্ন এলাকায় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। গত মঙ্গলবার এই বিক্ষোভের জেরে রাজধানীর ঢাকা প্রায় অচল হয়ে যায়। এর মধ্যেই গত মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সভাকক্ষে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, বিআরটিএ ও বিআরটিসিসহ সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে একটি সভা হয়। সেখান থেকে ঢাকায় গণপরিবহনে অপ্রাপ্তবয়স্ক ও ড্রাইভিং লাইসেন্সবিহীন চালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়।